Quick Query
News & Announcement
Seminar in association with Gyanjyoti College, Dagapur, Siliguri.
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাক্তনী সমিতি এবং শিলিগুড়ির জ্ঞ্যানজ্যোতি কলেজের যৌথ উদ্যোগে আজ ১৬ই সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হল আলোচনাচক্র " ভারতবর্ষের বিজ্ঞানের ইতিহাস : বৃটিশ উপনিবেশের শেষ পর্বে "। প্রদীপ প্রজ্বলন করে আলোচনা সভার উদ্বোধন করলেন কলেজের সভাপতি , শ্রী গুর চরণ সিং হোরা। স্বাগত ভাষণ এবং সভার আলোচ্য বিষয়ের মুখবন্ধ পেশ করেন অধ্যক্ষ ড: মলয় করন্জাই। বিষয়ের উপর বিস্তারিত আলোচনা করেন ড: তাপস চট্টোপাধ্যায়, সম্পাদক, প্রাক্তনী সমিতি, প্রাক্তন অধ্যাপিকা ড: অনিতা বাগচী, অধ্যাপক শেষাদ্রি বসু, শিক্ষক ও বিজ্ঞান আন্দোলনের নেতৃত্ব ড: গোপাল চন্দ্র দে। এর পরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় হয়। সভাপতিত্ব করেন এবং প্রাক-স্বাধীনতা পর্বে বিজ্ঞানের উদ্ভাবন সম্পর্কে বলেন প্রাক্তনী সমিতির সভাপতি ড: সীতাংশু করন্জাই। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কলেজের অধ্যাপক ড: দেবাশিস দাশগুপ্ত।
Detailed Report
বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতে বিজ্ঞানচর্চা ও গবেষণার স্বাধীন অধিকার ছিল অবরুদ্ধ। তাঁরা এই দেশের আকরিক, খনিজ সম্পদ, নীল- তুলো- চা- পাট- গম সহ অন্যান্য কৃষিকাজের জন্য প্রয়োজনীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্ভাবনের সুযোগ দিত। স্বাস্থ্যক্ষেত্রেও একই কথা। রোনাল্ড রস ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের জন্য কুইনাইন, আবিষ্কারের সুযোগ পেয়েছেন , হফকিন প্লেগের চিকিৎসায়, রজার্স কালাজ্বরের জন্য, রবার্ট কোচ কলেরার গবেষণায় সরকারি সাহায্য পেয়েছেন। কিন্তু ভারতীয় বিজ্ঞানীদের জন্য এই অধিকার ছিল না।
১৮১৩ সালে ইন্ডিয়া চার্টার ঘোষণার অনেক বছর পরে ১৮৫৭ সালে কলকাতা, মাদ্রাজ ও বোম্বাই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পরবর্তীকালে দেশের বিজ্ঞানীরা সীমাবদ্ধ গবেষণার সুযোগে নিজেদের উৎসর্গ করলেন। আশুতোষ মুখোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালীন এবং ১৯০৪ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইনের সুযোগ নিয়ে রাজাবাজার বিজ্ঞান কলেজের কাজ শুরু হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলেও প্রযুক্তি গবেষণায় বিজ্ঞানীরা জোটবদ্ধ হতে থাকেন। পাশাপাশি স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম, সংগঠন ও আন্দোলন এই কাজে যথেষ্ট অনুপ্রেরণা সঞ্চারিত করে।বালগন্গাধর শাস্ত্রী ও হরি কেশবজি পাঠারে (বোম্বাই),মাস্টার রামচন্দ্র ও কে এস ক্রিশ্নান ও বীরবল সাহানি (দিল্লি),শুভাজি বাপু ও ওঙ্কার ভাট যোশী ( মধ্য প্রদেশ), এস এস ভাটনগর ও হোমি জাহাঙ্গীর ভাবা ( বোম্বাই) এবং বাংলায় অক্ষয় দত্ত, জগদীশ চন্দ্র বসু,প্রথম নাথ বসু,আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, মেঘনাদ সাহা, সি ভি রমন, মহেন্দ্রলাল সরকার,নীলরতন ধর, রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী, পি সি মহালনবীশ, জান চন্দ্র ঘোষ প্রমুখ বিজ্ঞানীরা গবেষণার জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো ও বিজ্ঞান চর্চার সংস্কৃতি গড়ে তুললেন অভাবনীয় পরিশ্রমে। মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহনের দাবীও সোচ্চারিত হতে থাকল। ১৮৬৪ থেকে ১৯১০ সালের মধ্যে গড়ে উঠল অনেক গবেষণা প্রতিষ্ঠান। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বৃটিশ শাসকদের অসহায়তা ও নিজেদের কায়েমি স্বার্থেই প্রয়োজন হয়েছিল বিজ্ঞান গবেষণায় কিছুটা অগ্রগতি ঘটানোর জন্য অর্থ বরাদ্দ । আমাদের বিজ্ঞানীদের কাছে এটাও ছিল সুবর্ণ সুযোগ। স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বও নিপাট সমর্থন মেলে দেন, যেমন ১৯৩৮ সালে জাতীয় পরিকল্পনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত এবং মেঘনাদ সাহাকে আহ্বান।
উপরোক্ত বক্তব্য উল্লিখিত বক্তাদের আলোচনায় এবং প্রশ্ন-উত্তর পর্বে উঠে আসে।