Quick Query
News & Announcement
Minutes of the 17th Annual General Meeting held on 8/12/19.
আজ ৮ই ডিসেম্বর উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সমিতির ১৭তম বার্ষিক সাধারণ সভা ও পুনর্মিলন অনুষ্ঠিত হল। সভাপতির আসনে ছিলেন ড: সীতাংশু বিমল করন্জাই। মলয় করন্জাইয়ের কথা ও সুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্গীত পরিবেশন করেন প্রাক্তন ছাত্র বরুণ মজুমদার।প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত করে সভার উদ্বোধন করলেন শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি এবং প্রাক্তন ছাত্র তাপস সরকার। তিনি সাম্প্রতিক চীন ভ্রমণের এবং ঐ দেশের শিক্ষাজগত ও সামাজিক- সাংস্কৃতিক মহল সম্পর্কে আহরিত কিছু অভিজ্ঞতা সংক্ষেপে উপস্থিত করলেন। সভাধিপতি প্রস্তাব দিলেন, প্রাক্তনী সমিতির সাথে যৌথভাবে দুটি স্মারক গ্রন্থ প্রকাশ করা হোক, স্বামীজির শিকাগো বক্তৃতার ১২৫ বর্ষ এবং জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের শতবর্ষ উপলক্ষে। বলা বাহুল্য, এই প্রস্তাব মুহূর্তেই প্রবল আগ্রহে করতালি দিয়ে গৃহীত হল। সম্পাদক তাঁকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে একটি মিটিং আহ্বান করতে অনুরোধ করলেন।
সন্মেলনকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড: সুবীরেশ ভট্টাচার্য। এছাড়াও শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেছেন কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড: দেবকুমার মুখোপাধ্যায় এবং রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড: অনিল ভূইমালি। এঁরা সকলেই প্রাক্তনী সমিতির সদস্য।
৫১ জন প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রীদের এই সমাবেশ ছিল পুরানো সেই দিনের কথার স্মৃতি রোমন্থন এবং স্নাতকোত্তর / গবেষণাকালীন ক্যাম্পাস জীবনের বহু বিচিত্র অভিজ্ঞতায় রাঙানো ক'টা বছরের বিনিময়ে প্রাণবন্ত। উপস্থিত সকলে পরিচয় পর্ব থেকেই আবেগতাড়িত হয়ে পড়লেন। গান, কবিতা, গল্প ও আড্ডায় মুখরিত হয়ে রইল কনফারেন্স হল।
সম্পাদকীয় প্রতিবেদন পেশ করেন ড: তাপস চট্টোপাধ্যায়। সম্পাদকের কথায় জানা গেল উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় এবং বিদ্যালয়ের কাছ থেকে বিভিন্ন সমকালীন বিষয়ে আলোচনাচক্র আয়োজনের জন্য প্রাক্তনী সমিতির কাছে আহ্বান আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক ও কর্মসংস্থানমুখী পাঠক্রমের পঠন- পাঠনের আরো বিস্তৃতির জন্য লিখিত প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে । নিয়মিত যোগাযোগের লক্ষ্যে একটি সমন্বয় কমিটি গড়ার জন্য লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে । সম্পাদক আরো জানালেন আগামী ২২ শে ডিসেম্বর কলকাতায় এই সমিতির একটি অধিবেশনে যোগ দিতে আসবেন কলকাতা ও সংলগ্ন অঞ্চলে বসবাসকারী প্রাক্তনীরা যাঁরা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সভায় নানান অসুবিধার জন্য আসতে পারেন না।
সম্পাদক জানালেন, বিজয় সরকার, সদস্য, তাঁকে ( সম্পাদক) ৫/৯/১৯ ও ৭/৯/১৯ তারিখে দুটি ইমেল করে বিগত ১৮ বছর ব্যাপী সম্পাদক পদ আঁকড়ে থাকার অভিযোগ জানিয়েছেন। এই পত্রে তিনি অত্যন্ত অপমানজনক ও ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছেন এবং তার কপি কিছু সদস্যকেও দিয়েছেন।সম্পাদক তাঁকে ৭/৯/১৯ তারিখের ইমেল পত্রে প্রাক্তনী সমিতির সংবিধান মোতাবেক বার্ষিক সন্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কর্মসমিতর নির্বাচন এবং পদাধিকারীদের নির্বাচন সম্পর্কিত পূর্বাপর বিবরণ ও তথ্য জানিয়ে পরবর্তী বার্ষিক অধিবেশনে এই বিষয়ে আলোচনার অনুরোধ করেন কিন্তু তার পরেও তিনি অনড় মনোভাব নিয়ে ৭/৯/১৯ চিঠি দিলেন। বিজয় সরকারকে বক্তব্য রাখতে বলা হয়া তাঁর অসংলগ্ন ও অযৌক্তক বক্তব্য ও আচরণে সকল সদস্য গভীর উষ্মা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁকে সংযত হতে আবেদন করেন। তবে ডঃ সরকার ছিলেন অনমনীয়। তখন সভায় উপস্থিত সকলেই সম্পাদককে অনুরোধ করেন এই সব আপত্তিকর প্রসঙ্গ উপেক্ষা করতে এবং এই বিষয়ে কর্ণপাত না করতে।
আয় ব্যয়ের অডিটেড হিসাব রাখেন কোষাধ্যক্ষ ফজলুর রহমান। উভয় প্রতিবেদন সর্বসন্মতিতে গৃহীত হল।
প্রথাগত উপোরক্ত কর্মসূচীর পরে প্রস্তাবিত জাতীয় শিক্ষা নীতি বিষয়ে একটি মনোজ্ঞ সেমিনার অনুষ্ঠিত হল। এই শিক্ষা নীতির উচ্চশিক্ষা বিষয়ক অনুচ্ছেদ নিয়ে আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রস্তাবিত শিক্ষা নীতির সংক্ষেপসার উপস্থিত করেন ড: তাপস চট্টোপাধ্যায়। আলোচনায় অংশ নিয়ে ভাষণ দেন মহবুব উল আলম ও ডঃ আনন্দ গোপাল ঘোষ , উপস্থিত সদস্যদর অনেকেই নিজেদের খোলামেলা মতামত ব্যক্ত করলেন।
এর পরে সকলে পায়ে হেঁটে ক্যাম্পাসের মনোরম প্রকৃতির গন্ধ শরীরে মনে সন্চয়ে রেখে চললেন অতিথি নিবাসে মধ্যাহ্ন ভোজনের আসরে। তারপর আবার আড্ডার মজলিস ও ছবি তোলার হুটোপুটি দিয়ে সাঙ্গ হল একটি স্মরণীয় দিন, আগামী বছরের মিলনসভার কামনা বুকে নিয়ে।